লোনাপানির ভেটকি মাছের চাষ পদ্ধতি
মো: তোফাজউদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাগর উপকূলের স্বল্প লোনাপানির মাছের মধ্যে ভেটকি একটি সুস্বাদু, জনপ্রিয় এবং বাণিজ্যিকভাবে অতিব গুরুত্বপূর্ণ মাছ। অধিক লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা সহনশীল হওয়ায় উপকূলীয় ঘেরে এ মাছ চাষের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মাছ উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ, ক্ষতিকারক চর্বি নেই। উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের সাথে এ মাছ মিশ্রভাবে চাষ হচ্ছে। বিদেশে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও বাজারমূল্য বেশি থাকায় চিংড়ি চাষের পাশাপাশি অন্যান্য অল্প লোনাপানির এই মাছচাষ চাষিদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। বিদ্যমান সাধারণ চাষ পদ্ধতি দ্বারা এ মাছের উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে যা তাদের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। দেশের উপকূলীয় সকল অংশে সমভাবে এ মাছ চাষের সম্প্রসারণ ঘটে নাই তবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলায় এ মাছ চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে উপকূলীয় অঞ্চলের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাদুপানির পুকুরে অন্যান্য মাছের সাথে এ মাছচাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কোরাল মাছের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও উচ্চ বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কারণে এ মাছের প্রনোদিত (ওহফঁপব ইৎববফরহম) প্রজননের জন্য সরকার নানাবিধ উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছেন এবং এ মাছের চাষ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ করছে।
ভেটকি মাছের পরিচিতি : ভেটকি মাছ (খধঃবং পধষপধৎরভবৎ) এশিয়া অঞ্চলে ঝবধ নধংং , অস্ট্রেলিয়ায় বারামুন্ডি (ইধৎৎধসঁহফর) এবং বাংলাদেশে ‘কোরাল’ ও ‘ভেটকি’ এবং স্থানীয়ভাবে ’পাতাড়ি’ নামে পরিচিত। খধঃরফধব পরিবারের চবৎপরভড়ৎসবং বর্গের ও খধঃবং গণের অন্তর্ভুক্ত এ মাছটির দেহ লম্বাটে, পার্শ্বীয়ভাবে চাপা, নিচের চোয়াল উপরের চোয়ালের তুলনায় সামান্য বড়। এটি একটি লবণাক্ত পানির মাছ হলেও স্বাদু পানিতেও বড় হয়। এদের চোখ সোনালি-বাদামি বর্ণের। ভেটকি মাছের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১.৫-২.০ মিটার হয়ে থাকে এবং ওজন সর্বোচ্চ ৫৫-৬০ কেজি হতে পারে। ভেটকি মাছ উচ্চ প্রজননক্ষম (ঐরময ঋবপধহফরঃু) হওয়ায় বছরে প্রায় ৬০-৭০ লক্ষ ডিম দেয়। এটি অভিপ্রয়াণশীল (গরমৎধঃড়ৎু) ও উচ্চ লবণাক্ততা সহিষ্ণু প্রজাতির মাছ।
ভেটকি মাছের আবাসস্থল
া বাংলাদেশে দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গোপসাগর এবং চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও পটুয়াখালীর সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় নদী মোহনায় এবং চিংড়ির ঘেরে ভেটকি পাওয়া যায়।
া ভেটকি মাছ সাধারণত মোহনা এবং লোনা পানির পরিবেশকে তাদের নার্সারি গ্রাউন্ড ও খাদ্যের উৎস হিসাবে ব্যবহার করে।
া নদীর মুখে ও উপকূলীয় এলাকায় যেখানে লবণাক্ততা ৩০-৩২ পিপিটি এবং গভীরতা ১০-১৫ মিটার সেখোনে পরিপক্ব ভেটকি মাছ পাওয়া যায়।
া ভেটকি মাছ ঈধঃধফৎড়সড়ঁং স্বভাবের অর্থাৎ তাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় মিঠা পানিতে কাটে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য নোনা পানিতে পাড়ি জমায়। ভেটকি মাছের পোনাগুলো উপকূলীয় নদী স্রােতে পাওয়া যায় এবং বড় ভেটকি মাছ সাগর ও নদী-মোহনায় পাওয়া যায়। তাদের সমগ্র জীবনচক্র কাটে নোনা ও স্বল্প লোনা এবং স্বাদু পানিতে। এ মাছ বিস্তৃত (ডরফব জধহমব) লবণাক্ততার মধ্যে বেঁচে থাকতে পারে। ভেটকি মাছ সাধারণত গাছের গুঁড়ি বা অন্যান্য বস্তুর নিচে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে।
পুকুরে ভেটকি মাছচাষের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ব্যতিক্রম বিষয় রয়েছে। সাধারণত রুই জাতীয় মাছের (শতকে ১০-২০টি) সাথে এ মাছচাষ করা যাবে। রুই জাতীয় মাছের আকার ১০০-২০০ গ্রাম (এর ছোট নয়) হলে তার সাথে ভেটকি মাছের পোনা মজুদ করা যাবে। একটি পুকুরে ভেটকি মাছের ছাড়ার পরিমাণের উপর খাবার সরবরাহ নির্ভর করে। খাবার কোথা থেকে, সংগ্রহ করতে পারবেন এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়ে তার পরে মজুদ ঘনত্ব ঠিক করতে হবে। সাধারণভাবে বাহির থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জীবন্ত ছোট মাছ সরবরাহ করতে পারলে শতকে ১০-১৫টি (৪-৫ ইঞ্চি) পোনা মজুদ করা যেতে পারে। যদি বাহির থেকে বাড়তি ছোট মাছ সরবরাহ না করা হয় তাহলে শতকে ১-২টি পোনা মজুদ করাই ভাল।
চাষের পুকুর প্রস্তুতি : ভেটকি মাছের একক চাষের তেমন প্রচলন নাই। সাধারণত রুইজাতীয মাছের সাথে মিশ্র চাষ পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। কার্পজাতীয় মাছের চাষের জন্য যেভাবে পুকুর প্রস্তুত করতে হয় সেভাবেই ভেটকি মাছচাষের জন্য পুকুর প্রস্তুত করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে পুকুরের পাড়ে যেন কোন সুড়ং বা গর্ত না থাকে। পুকুরের পানি প্রবেশের পথ মজবুত নেট দিয়ে বা বাশের বানা দিয়ে আটকিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ভেটকি মাছ তার মজবুত তিক্ষè দাত দিয়ে জাল কেটে বেরিয়ে যেতে পারে। পুকুর প্রস্তুতের পর ১০০ গ্রামের বড় আকারে কার্পজাতীয় মাছ মজুদ করে ভেটকি মাছের পোনা মজুদ করতে হবে। অর্থাৎ ভেটকি মাছের থেকে কার্পের পোনা অবশ্যই বড় হতে হবে।
পোনা সংগ্রহ এবং মজুদপূর্ব প্রতিপালন : আধা লবণাক্ত পানির এ মাছ জীবনের সকল পর্যায়ে অক্সিজেনে প্রতি বেশ স্পর্শ কাতর। এ জন্য এ মাছের পোনা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সংগ্রহ ও পরিবহন করতে হয়। কার্পজাতীয় মাছের থেকে এসব প্রজাতির মাছের পোনা পরিবহন বেশ কষ্ট কর। একটু অসর্তক হলেই পরিবহনের সময় অনেক পোনার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আলোচিত মাছের পোনা পরিবহন কিছুটা দুরূহ কাজ। এ জন্য উৎস থেকে ছোট পোনা সংগ্রহ করে একটি ছোট নার্সারি পুকুরে রেখে কিছু দিন পালন করে মজুদ পুকুরে ছাড়লে ভাল হয়। এর ফলে নির্দিষ্ট আকারের পোনা প্রাপ্তি সহজ হয় এবং পরিবহনজনিত মৃত্যুহার কমানো যায়। পোনা প্রতিপালন কাজটি খুব জটিল কঠিন নয়। মূল চাষের পুকুরের কাছাকাছি একটি পৃথক ছোট নার্সারি পুকুর হলে ভাল হয়, না থাকলে এ কাজটি চাষের পুকুরের এক অংশ নেট দিয়ে (ওহঢ়ড়হফ ঘঁৎংবৎু) ঘিরে তার মধ্যে ১ মাস চাষ করে নেয়া যেতে পারে। এ কাজটি একটি লাইনোনের বড় হাপার (১৫/৩০ ফুট) ভিতরেও করা যেতে পারে। এখানে খাবার হিসাবে ভেটকি মাছের জন্য ছোট ধানি পোনা (২০০০-২৫০০ লাইনের) সরবরাহ করতে হবে। এভাবে ৩০-৪০ দিন লালন করে চাষের পুকুরে ছেড়ে দেয়া যায়। এভাবে পোনা প্রতি পালন করে পুকুরে মজুদ করলে পোনা বাচার হার বেশি পাওয়া যায়। পুকুরে মাছচাষে সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োগ করা যায়।
পরিবহন পাত্রের পানির তাপমাত্রা ও রাসায়নিক গুণাগুণ পুকুরের পানির তাপমাত্রা ও রাসায়নিক গুণাগুণের পার্থক্য থাকে। এজন্য পোনা পরিবহন পাত্র থেকে পুকুরে ছাড়ার আগে পুকুরের পানির সাথে অভ্যস্থ করে নিতে হবে। এ উদ্দেশ্যে পরিবহন পাত্র হতে পোনা পুকুরে ছাড়ার আগে পুকুর হতে পরিবহন পাত্রে অপর একটি পাত্র দিয়ে পানি মিশাতে হবে। অক্সিজেন ব্যাগের ক্ষেত্রে ব্যাগ পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে রাখতে হবে এবং ধীরে ধীরে বাধন খুলে পূর্বের ন্যায় পরিবেশে খাপখাওয়াতে হবে।
পোনা অবমুক্তকরণ : পোনা ছাড়ার আগে পুকুরের পানিতে তাৎক্ষণিক অক্সিজেন সরবরাহের জন্য সোডিয়াম পারকার্বনেট ৩০ শতকে ০.৫ কেজি হারে পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এর পাশাপাশি জীবাণুনাশক পরিমাণমতো পানিতে ভালভাবে গুলিয়ে পুকুরে ছিটিয়ে দিলে পোনার বাচার হার ভাল হবে। এ কাজটি পোনা ছাড়ার পরও করা যেতে পারে। পোনা অভ্যস্থ করার পর পাত্রের মুখ কাত করে ধরে বাহিরের থেকে ভিতরের দিকে স্রােতের ব্যবস্থা করলে পোনা স্রােতের বিপরিতে ধীরে ধীরে পুকুরে চলে যাবে। পোনা সাধারণত সকালে অথবা বিকালে ছাড়তে হবে।
মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা
চাষের মাছের ভাল বর্ধনের জন্য নিয়মিত পরিমিত খাবার প্রয়োগ একান্ত প্রয়োজন। ভেটকি মাছ সম্পূরক খাবার খায় না কেবল জীবন্ত মাছ খেয়ে বড় হয়। ভেটকি মাছচাষের জন্য আমরা দুভাবে জীবন্ত মাছের ব্যবস্থা করতে পারি।
া পৃথক নার্সিারি পুকুরে কম দামের রুই জাতীয় মাছের রেণু যেমন, সিলভার, মৃগেল, বাটা মাছের পোনা প্রতি পালন করে ভেটকি মাছের চাহিদা অনুযায়ী আকারের (১.৫-২ ইঞ্চি) পোনা ধরে চাষের পুকুরে ছাড়া যেতে পারে। প্রতি দিন এভাবে পোনা দেয়া যেতে পারে। তবে ৬ থেকে ৭ দিন পরপর নার্সারি পুকুর থেকে পরিমাণ মত পোনা ধরে চাষের পুকুরে ছেড়ে দিয়েও চাষ করা যায়। এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি পড়ে। তবে এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে চাষের পুকুরে কিছু পোনা আকারে বড় হয়ে যায় যা ভেটকি মাছে আর ধরে খেতে পারে না। এ বড় আকারের পোনা বিক্রয় করে বাড়তি আয় পাওয়া যায়।
২) ভেটকি মাছের পুকুরে দেশি তেলাপিয়া, টিতপুটি, চোখকুনি, দাড়কানি, মলা, কানপোনা প্রভৃতি ছোট প্রজাতির কিছু মা মাছ চাষের পুকুরে মজুদ করলে পুকুরে এসব প্রজাতির মাছ পোনা উৎপাদন করে যা ভেটকির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। ছোট প্রজাতির এ সব মাছের দ্রুত বৃদ্ধি ও বংশ বিস্তারের জন্য অটোকুড়া বা পাউডার জাতীয় খাবার দিতে হয়। আর এটাই ভেটকি মাছচাষের সর্বোত্তম পদ্ধতি। ছোট মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকলে ভেটকি মাছ বৃদ্ধি পায় না এবং বড়গুলো ছোটদের ধরে খেয়ে ফেলে। এ কারণে অনেক সময় চাষি মজুদ সংখ্যার অনুরূপ সংখ্যক মাছ আহরণ করতে ব্যর্থ হন। পর্যাপ্ত খাবার না সরবরাহ করলে উৎপাদিত মাছের আকারেও ব্যাপক তারতম্য হতে দেখা যায়।
৩) উপরে আলোচিত দুটি পদ্ধতির সমন্বয়েও ভেটকি মাছের খাবারের সংস্থান করা যেতে পোরে। আর যে চাষির জন্য যে পদ্ধতি সহজ হবে সেভাবে তিনি এ মাছচাষের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ হল ভেটকি মাছের জন্য খাদ্যের সংস্থান করা ব্যতিরেকে চাষে নামা ঠিক নয়। তবে ঘনত্ব কম হলে বাহির থেকে ছোট পোনা সরবরাহ না করলেও কিছু ভেটকি মাছচাষ করা যায়।
এক কেজি ভেটকি মাছ উৎপাদন করতে কত কেজি পোনা মাছ লাগে তা নিয়ে বিস্তর মত পার্থক্য আছে। বেশির ভাগ চাষির মতে ২-৩ কেজি জীবন্ত পোনা খাওয়ালে ১ কেজি ভেটকি মাছ উৎপাদন করা যায়।
বিঃদ্রঃ কোন কোন মাছ চাষি মরা মাছ খাইয়ে বিশেষ করে খাল বিলের দেশি পুঁটি মাছ বাজার থেকে সংগ্রহ করে ভেটকি মাছচাষের চেষ্টা করছেন এবং প্রাথমিকভাবে কিছুটা সফলতাও লাভ করেছেন বলে আমাদের নজরে এসেছে।
মাছ আহরণ ও বাজারজাতকরণ
উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে নিয়মিত খাদ্য এবং পরিচর্যা চালিয়ে গেলে মোটামুটি ৭-৮ মাস চাষ করলে মাছ বাজারে বিক্রয় উপযোগী হয় তবে যেহেতু এ মাছ রাক্ষুসে প্রজাতির সে জন্য সকল মাছে সমভাবে খাবার গ্রহণ করতে পারে না এ জন্য উৎপাদিত মাছের মধ্যে ছোট বড় হতে দেখা যায়। একই সময়ে কিছু মাছ ২-৩ কেজি আকারের হয় আবার কিছু কিছু ৭০০-৯০০ গ্রামের হতে দেখা যায়।
আহরণের পর আমাদের দেশে মাছের সঠিক যতেœর অভাবে মাছে গুণগত মানের ক্ষতি হয়, কারণ মাছের সজিবতা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আলোচ্য মাছের ভেতর নোনা ট্যাংরা আমাদের চাষের অন্যান্য প্রজাতির মাছের ন্যায় বাজারজাত করা যেতে পারে। তবে ভেটকি, ভাঙন, পারশে এবং খরশোলা মাছ বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। মাছ আহরণের সাথে সাথে বাজারে নিতে হবে অথবা দ্রুত বরফায়িত করতে হবে। মাছ বাজারে প্রেরণের সময় ক্যারেটে করে পরিবহন করা উত্তম। বেশি বড় আকারের পাত্রে অধিক ঘনত্বে পরিবহন করা উচিত নয়। মাছ ধরা বা পরিবহনের সময় মাছ যাতে আঘাত প্রাপ্ত না হয় সে দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ আঘাতপ্রাপ্ত মাছ বেশি সময় সজীবতা থাকে না এবং মাছের গায়ের রং নষ্ট হয়ে যায়।
সতর্কতা : ভেটকি মাছচাষের পুকুরের পানি প্রবেশের রাস্তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ভেটকির চোয়ালে খুব ধারাল দাঁত থাকে যা দ্বারা সাধারণ নেট কেটে বের হয়ে যেতে পারে। এ জন্য পানি প্রবেশের পাইপের মুখে মজবুত নেট দিয়ে শক্তভাবে আটকাতে হবে। বানা দিয়ে আটকানো থাকলেও চলবে তবে পানির এ প্রবেশ বা বাহিরে বের হওয়ার পথ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
উল্লেখ্য সঠিক পদ্ধতিতে ১৫ বিঘার আয়তনের একটি পুকুরে ৩-৪ ইঞ্চি আকারের ভেটকি মাছ চাষ করলে ২২৮০টি পোনা মজুদ করা যায়। তাতে ১ বছরে ০.৮ কেজি থেকে ৩.৫ কেজি আকারের ১৭২১টি মাছ পাওয়া যেতে পারে এবং কেজি প্রতি ৪০০ টাকা করে বিক্রয় করা সম্ভব।
লেখক : সাবেক ডিভিশনাল ডেপুটি ডাইরেক্টর, মৎস্য অধিদপ্তর, খুলনা বিভাগ, খুলনা, মোবাইল : ০১৭৫১৯৩৯৯৩২, ই-মেইল : ঃড়ভধু২০১০@মসধরষ.পড়স